কলারোয়া প্রতিনিধি: সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরার কলারোয়ায়ও সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে কঠোর লকডাউনের মধ্যে ব্র্যাক এন.জি.ও জোর করে কিস্তির টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল কায়দায় কিস্তি আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী সদস্য।
তুলশিডাঙ্গা গ্রামের চঞ্চল জানান, গত কয়দিন আগে ব্র্যাকের একটি প্রচার গাড়ী বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে ব্র্যাক কর্মিরা স্বাস্থ্য সেবা দিবে বলে প্রচার করে যায়। এখন দেখছি ব্র্যাকের কর্মিরা বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে কিস্তি আদায়ের সেবা দিচ্ছে। তিনি বলেন সম্পূর্ণ ডিজিটাল কায়দায় ব্র্যাকের পি.ও’ রা টাকা আদায় করে বিভিন্ন বিকাশ নাম্বার থেকে ব্র্যাকের নির্দিষ্ট দেওয়া একটি বিকাশ নাম্বারে পেইমেন্ট করছেন যেটা তারা সরকারকে প্রমান করছেন গ্রাহক নিজেরাই টাকা বিকাশ করে কিস্তি দিচ্ছে। তিনি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ট তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেছেন।
গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় কলারোয়া উপজেলার খোরদো গ্রামের আনারুলের স্ত্রী মুর্শিদা খাতুনের কাছে কিস্তি আদায়ের জন্য পি.ও ফোন দিয়ে টাকা চাচ্ছে । সে সময় মুর্শিদার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমার আর তিনটি কিস্তি বাকী আছে এই লকডাউনে কোন ইনকাম না থাকায় এই কিস্তিটা দিতে পারছি না কিন্তু কোনভাবেই সেটা হবে না বলে ব্র্যাকের কর্মি জানিয়ে দেয়। তিনি ক্ষোভ দেখিয়ে বলেন ব্র্যাক কি সরকারের উপরে? এরা সরকারের নির্দেশনাও মানে না।
উপজেলার ঘরচালা কাশিয়াডাঙ্গার সলেমানের স্ত্রী ফুলবানু জানান, আমরা দুমুঠো ভাত খেতে পারছি না অথচ ব্র্যাক কর্মির ফোনে টাকা চাওয়ার জালাই মনে হয় আতœহত্যা ছাড়া কোন পথ নাই। তিনি ক্ষোভ দেখিয়ে বলেন এদের এই নির্যাতন দেখার কি কেউ এ দেশে নাই? একই ভাবে উপজেলার গণপতিপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম জানান অভাবের তাড়নায় ছেলে মেয়ে নিয়ে ঠিকমত খাওয়া হচ্ছে না কিন্তু ব্র্যাকের পি.ও দের টাকার কিস্তির চাপে বাড়ী ছেড়ে পালানো ছাড়া কোন পথ দেখতে পারছি না। কোন এন.জি.ও কিস্তি আদায় করছে না অথচ রক্তচোষা ব্র্যাক ঘরে ঘরে যেয়ে কিস্তি আদায় করছে।
এই ব্র্যাক কর্মিরা প্রত্যন্ত গ্রামে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর মূল কারন। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে গ্রামে কিস্তি আদায় করতে আসা ব্র্যাকের একাধিক পি.ও দের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন আমরা অল্প টাকা বেতনে চাকুরি করি আমাদেরকে প্রতিষ্ঠান এমন ভাবে কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ দিচ্ছে, যে চাকুরি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ দেখছি না। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে চাকুরি ছেড়ে বউ বাচ্চা নিয়ে যাব কোথাই? এই জন্য বাধ্য হয়ে কিস্তি আদায় করতে হচ্ছে। যদি অন্য কোন উপায় থাকত, তাহলে এই জনদূর্ভোগে চাকুরি না থাকলেও, কিস্তি আদায় করতে বের হতাম না।
এ ব্যাপারে ব্র্যাকের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি আশরাফ হোসেনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কিস্তি আদায়ের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, যদি কোন কর্মি কিস্তি আদায় করে থাকেন তাহলে প্রমান সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।