News Bangla

ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি কার্যকর

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ১১ দিনের অব্যাহত বিমান হামলার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এরপরই গাজার রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ‘আল্লাহু আকবর’, ‘আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া’ স্লোগান দেয় তারা। এই সংঘাতে ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ে বিজয় দাবি করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে উত্তেজনা থেকে গত ১০ মে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযানের জেরে হামাস রকেট ছোড়া শুরু করলে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। গত কয়েক দিনের সংঘাতে নারী ও শিশুসহ ২৩২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে গাজা থেকে রকেটে ইসরায়েলের ১২ নাগরিকের নিহত হয়েছে।

শুক্রবার যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এটা উন্নতির চরম সুযোগ সামনে এনেছে। এর আগে ইসরায়েলের রাজনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা জানায় তারা যুদ্ধবিরতির সুপারিশ সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্তজ বলেছেন গাজায় হামলার মাধ্যমে অভূতপূর্ব সামরিক অর্জন হয়েছে।

অন্যদিকে হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য বিজয় এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য পরাজয়।

শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর দুইটায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি গাজার রাস্তায় নেমে আসেন। মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা করা হয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বিজয় অর্জিত হয়েছে।

তবে এই যুদ্ধবিরতি টিকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন হামাসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের কর্মকর্তা বাসিম নাইম। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের জন্য ন্যায়বিচার ছাড়া, ইসরায়েলের আগ্রাসন ছাড়া আর জেরুজালেমে আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সহিংসতা বাদে এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর হয়ে পড়তে পারে।’

ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি কার্যকর

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজার রাস্তায় উল্লাসরত ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের এক ঊর্ধ্বতন নেতা। ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াইয়ে বিজয় দাবি করে তিনি বলেন, এটা বিজয়ের উচ্ছ্বাস। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা খলিল আলা-হায়া। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্ততা করেছে মিসর। এতে যুক্ত রয়েছে গাজার দ্বিতীয় শক্তিশালী গ্রুপ ইসলামিক জিহাদ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতির সম্মতি আসার পর মধ্য রাত থেকে এটি কার্যকর হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে হামাসহ গাজার বিভিন্ন গ্রুপ দেশটি লক্ষ্য করে চার হাজার তিনশ’ রকেট ছুঁড়েছে। তবে এর বেশিরভাগই প্রতিহত করেছে ইসরায়েলে আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এসব রকেট হামলায় ইসরায়েলের ১২ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযানের জবাবে হামাস রকেট হামলা চালালে গাজায় বিমান হামলা শুরু হয়। গাজার শত শত স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন এই হামলায় হামাস বহু বছর পিছিয়ে পড়েছে।