মিলি সুলতানা।। ফিলিস্তিনিরা খুন হচ্ছে আর ভারতীয়রা তার উৎসবে মেতেছে। ভারতীয়রা চোখ কান বুঁজে ইসরায়েলের বাংলাদেশে যদি হিন্দু নির্যাতনের দু’চারটে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে শার্দুলের মত সোশাল মিডিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশের বুদ্ধিবিচিরা (বুদ্ধিজীবী)!! এসব চেতনাবাজ ঠকবাজ বুদ্ধিবিচিরা একমগ কফি আর তিন হাজার টাকার লোভে টিভি চ্যানেলে গিয়ে “বাচাল শো” করে। ব্লগার ইস্যু নিয়ে সোশাল মিডিয়ার পরজীবী প্রাণীগুলো ধুম মাচায়। কবে কোন ব্লগার খুন হয়েছে সে দুঃখে আজও ন্যাপকিন চিপকায় চেতনার ঠিকাদাররা।
এই যে ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের নারকীয় হামলা চলছে, শত শত মানুষ খুন হচ্ছে, শিশু খুন হচ্ছে, মায়ের চোখের সামনে সন্তানের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। কই কাউকে তো দেখলাম না সোশাল মিডিয়া অথবা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় জোর প্রতিবাদ জানাতে!! এখন চেতনাবাজ টাউট বুদ্ধিবিচিদের বিবেক কি বলে? এখন কি মানবাধিকার লংঘন হচ্ছেনা?? আসলে বুদ্ধিবৃত্তিকে যারা বেশ্যাবৃত্তিতে পরিচিত হতে বাধ্য করে, তারা আগে থেকেই নৈতিক স্খলনের উপর প্রচুর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছে।
আমি যেখানে বসবাস করি সেই নিউইয়র্ক বাঙালি কম্যুনিটিতে অনেক লেখক কবি সাংস্কৃতিক কর্মী ও বুদ্ধিজীবী আছেন। কিন্তু ইনারা কেউই ফিলিস্তিনিদের জন্য “এক ছটাক মানবতা” দেখাবেন না। নিউইয়র্কের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাউকেই দেখলাম না দুটি বাক্য লিখে মানবিকভাবে ফিলিস্তিনের জন্য সমব্যথী হতে। সেখানে একবুক হতাশা নিয়ে দেখি, এখানে প্রতিদিন রঙ্গনাট্য মঞ্চস্থ হচ্ছে। আজাইরা উকুন মারা টপিক নিয়ে ভার্চুয়াল আড্ডার পসরা দেখতে পাই।
বাঙালি কম্যুনিটির স্বনামধন্য ও সুশিক্ষিত ব্যক্তিরা মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে বসে আছেন। একটুখানি মানবিক হতে যাওয়া কি এতই কঠিন ব্যাপার?? আপনারা নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন, বাংলাদেশে সামান্য হিন্দু নির্যাতন হলে আপনাদের ইনসোমনিয়া রোগ হয়। তখন আপনারা ভারি ভারি হাতুড়ি দিয়ে এখানে সেখানে মানবতার পেরেক ঠুকেন।
আপনাদের লেখক কবি সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ইমেজের কোনো সার্থকতা আছে কি? স্পষ্ট ভাষায় বলব –নেই। এমন ধব্জাধারী বুদ্ধিজীবী এবং So called কবি সাহিত্যিকের দুই পয়সা মূল্য নেই। নিউইয়র্কের বাঙালি কম্যুনিটির পাত্র পাত্রীরা তাদের পেট চেপে বাথরুমে বসে মানবতাকে ফ্ল্যাশ করে দিয়েছেন। আমি এসব শো অফ মারা চেতনাবাজদের মনভরে ঘেন্নাই আর ঘেন্নাই। তাদেরকে শ্রদ্ধা? আমার বিবেক আমাকে সতর্কবার্তা পাঠায়, শ্রদ্ধা খুব দামী বস্তু। এটাকে অপাত্রে দান করতে নেই।