দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসের টিকা দ্রুত সরবরাহে একটি সংরক্ষণাগার গড়ে তুলতে চীনের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রক্রিয়া হলো ‘ইমার্জেন্সি কোভিড ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি’। দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচটি দেশকে এই কাঠামোতে যোগ দিতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
অর্থাৎ চীনের নেতৃত্বে ছয়টি দেশ নিয়ে গঠিত হতে পারে ইমার্জেন্সি কোভিড ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর সাউথ এশিয়া।যে পাঁচটি দেশকে চীন প্রস্তাব দিয়েছে, সেগুলো হলো আফগানিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এ কাঠামোতে যোগ দিতে ‘নীতিগতভাবে সম্মতি’ জানিয়েছে। ঢাকার এই স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিতে যোগ দিতে কোনো আপত্তি নেই। সম্মতি জানিয়েছে প্রস্তাব পাওয়া অন্য দেশগুলোও।
তিনি বলেন, অনেক সময় বিভিন্ন দেশে হঠাৎ হঠাৎ ভ্যাকসিনের ঘাটতি দেখা যায়। তখন তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে টিকার দরকার হতে পারে। এজন্য চীন এমন একটি স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি তৈরি করতে চায়, যাতে জরুরি সময়ে এই স্টোরেজ থেকে টিকা সরবরাহ করে প্রয়োজন মেটানো যায়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের জন্য এখন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে ভারতের ওপর। কিন্তু দেশটি বর্তমানে টিকা রপ্তানী বন্ধ রেখেছে, ফলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি পুরোপুরি অনিশ্চয়াতার মধ্যে পড়ে গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ এখন বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
এ উদ্যোগ থেকে ভারত শেষ পর্যন্ত বাদ যাবে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা এ বিষয়টি সম্পর্কে এখনো জানে না। কারণ প্রস্তাবটি এসেছে চীনের পক্ষ থেকে এবং তারাই এ নিয়ে বলতে পারবে।
সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কোভিড-১৯ এর টিকা সবার জন্য সহজলভ্য করার তাগিদ দিয়েছেন। চীন এখন চাইছে, দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে যদি কোভিড-১৯ এর টিকা জরুরি ভিত্তিতে দরকার হয়, তাহলে যেন তা দ্রুততার সঙ্গে সরবরাহ করা যায়।
তবে এই স্টোরেজ সুবিধা কোন দেশে তৈরি হবে, সেটা এখনো নির্ধারণ হয়নি এবং এ বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে চীনা সরকারের কাছে বাংলাদেশ বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টিকা সংগ্রহের জন্য সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে।