News Bangla

কেশবপুরে রাজমিস্ত্রীর সহকারীর উপার্জনের টাকায় শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

আ.শ.ম. এহসানুল হোসেন তাইফুর,
গরিব ও মেধাবী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ সহায়তা প্রদান করে চলায় রাজমিস্ত্রীর সহকারী হোসাইন আহম্মেদ এখন কেশবপুরে পরিচিত মুখ। রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে প্রতিদিন কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করে তা থেকে কিছু টাকা রেখে প্রতিবছর জেএসসি/জেডিসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের ভেতর বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে থাকেন তিনি।

উপজেলার মজিদপুর গ্রামের মোফাজ্জেল মোড়ল খোকনের ছেলে হোসাইন আহম্মেদ নিজ উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে সমাজের অবহেলিত ও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি ওই কাজের পাশাপাশি ‘বাল্য বিবাহ বন্ধ করুন, লেখা পড়ায় মনোযোগি হন’ এই শ্লোগানে এলাকায় বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির সহকারী। হুসাইন আহম্মেদ রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করেও শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য নিজ অর্থায়নে বিগত ৯ বছর যাবৎ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জেএসসি/জেডিসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার কেশবপুর উপজেলার এস এস জি তেঘরী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, হাসানপুর দারুল সুন্নাহ মাদাসা, তেঘরী পল্লী মঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্রীপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহীদ ফ্লাইট লে. মাসুদ মেমোরিয়ার ডিগ্রী কলেজের ২৩০ জন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্র্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। এ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্প্রতি তাকে প্রথমআলো বন্ধুসভা সম্মাননা ২০২১ দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি মহতি উদ্যোগের বিষয় হোসাইন আহম্মেদের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন সহায় সম্বলহীন মানুষ। রাজমিস্ত্রীর সহকারীর কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করি এবং কেশবপুর কলেজে ডিগ্রী শেষ বর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছি। এই কাজের মুজুরীর টাকা থেকে প্রতি দিন কিছু অর্থ শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ের জন্য জমা রাখি। সেই অর্থ দিয়েই ২০১৩ সাল থেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করে থাকি এবং সমাজের অবহেলিত ও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরে এনে ইতিপূর্বে ৬ জনকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সহযোগিতা করেছি।