দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ১০৮ জন। এর আগে চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর দিকে গত ১৯ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১০৮ জনকে নিয়ে এ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে করোনায় মোট মারা গেছেন ১৩ হাজার ৯৭৬ জন।
একই সময়ে নতুন করে আরও ৫ হাজার ৮৬৯ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে সরকারি হিসাবে ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৪ করোনা রোগী শনাক্ত হলেন। শুক্রবার (২৫ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হলে গত ১৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দৈনিক মৃত্যু একশ ছাড়িয়ে যায়। টানা তিনদিন একশর উপরে মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়; যা এখন পর্যন্ত দেশে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এরপরে গেল ২৫ এপ্রিল ১০১ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। সেই হিসাবে আজ পঞ্চম দিন যেদিন একশ জনের উপরে মৃতের তথ্য দেওয়া হলো। আর একদিনে মৃতের সংখ্যায় এটি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৭৭৬ জন। তাদের নিয়ে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫৯-এ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ২৮ হাজার ২৪৭টি। আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ৬৫৩টি। দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ১১৯টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৭ লাখ ১৭ হাজার ১৮৩টি আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৬টি।
গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ২১ দশমিক ২২ শতাংশ আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৭৬ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার এক দশমিক ৫৯ শতাংশ।
সারাদেশে বর্তমানে ৫৫৪টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে ১২৬টি, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে ৪৬টি এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে ৩৮২টি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০৮ জনের মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৭৫ জন আর নারী ৩৩ জন। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ৯ হাজার ৯৯৫ জন আর নারী ৩ হাজার ৯৮১ জন।
গেল ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের একজন শিশু ছিল; যার বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এছাড়া মৃত অন্যদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব বয়সী ছিলেন ৫৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সসীমার ২৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সাতজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন দুজন।
বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগের মধ্যে মারা গেছেন ২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ জন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে ১০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন চারজন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৮৩ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৪ জন আর বাড়িতে থেকে মারা গেছেন ১১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া দুই হাজার ৭৭৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের এক হাজার ৩৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৪৩ জন, রংপুর বিভাগের ৮৭ জন, খুলনা বিভাগের ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগের ৩১৬ জন, সিলেট বিভাগের ১০০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের আছেন ৭৮ জন। সূত্র-বাংলা ট্রিবিউন।