চট্টগ্রামে করোনায় আবারও মৃত্যুতে রেকর্ড করেছে। একদিনে করোনায় ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নতুন ১১ মৃত্যু নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯৭ জনে। এপ্রিলের প্রথম ২৫ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭১ জন।
রোববার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭১ জনের দেহে। এদের মধ্যে ১৪১ জন নগরীর ও ৩০ জন বিভিন্ন উপজেলার। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৮ হাজার ৮৮৭ জনে।
আরো জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ৬টি ল্যাবে ১ হাজার ৩৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৩ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জনের শরীরে করোনা জীবাণু পাওয়া গেছে।
এছাড়া ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন ও শেভরণ ক্লিনিকের ল্যাবে ৩৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জনের শরীরে করোনার জীবাণু ধরা পড়েছে।
একই সময়ে জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন এবং মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। তবে এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
এদিকে করোনা সংক্রমণে জেলার হাটহাজারী ও নগরীর হালিশহর এলাকা রয়েছে সবার ওপরে। এর পরে আরো ৬ এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে জেলার তিন উপজেলা ও নগরীর তিন থানা। এই ৬ এলাকা হলো জেলার সীতাকু-, পটিয়া, রাউজান, নগরীর কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, হাটহাজারীতে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২২ জন, সীতাকু-ে ১৫ জন, পটিয়ায় ১৪ জন ও রাউজানে ১৫ জন। অপরদিকে হালিশহরে শনাক্তের সংখ্যা ৪০ জন, কোতোয়ালীতে ৩৯ জন, পাঁচলাইশে ২৯ জন ও চান্দগাঁওয়ে ২৭ জন।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১২৪ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে হাটহাজারী, সীতাকু-, পটিয়া ও রাউজানেই মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। অন্যদিকে নগরীতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৬২ জনের। এর মধ্যে হালিশহর, কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭৫ জনের। মোট মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে হাটহাজারী, হালিশহরসহ এ আটটি এলাকাতেই।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত সাতকানিয়া উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৬৭ জনের। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। সীতাকু-ে ৮৩৩ শনাক্তের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বোয়ালখালীতে মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ শনাক্তের মধ্যে ৮ জন, পটিয়ায় ৮৬৯ জনের মধ্যে ১৪ জন, আনোয়ারায় ৪২১ জনের মধ্যে ৬ জন, চন্দনাইশে ৪২১ জনের মধ্যে ৪ জন, ফটিকছড়িতে ৮৬০ জনের মধ্যে ৭ জন, মীরসরাইয়ে ৪৩০ জনের মধ্যে ৪ জন, হাটহাজারীতে ২ হাজার ১৯৩ জনের মধ্যে ২২ জন, লোহাগাড়ায় ২৯৫ জনের মধ্যে ৬ জন, সন্দ্বীপে ১৪৯ জনের মধ্যে ৩ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৫০৮ জনের মধ্যে ১০ জন, বাঁশখালীতে ৪৭৮ জনের মধ্যে ২ জন ও রাউজানে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২০৭ জনের মধ্যে ১৫ জন।
আরো জানা যায়, এ পর্যন্ত নগরীর চকবাজারে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। খুলশীতে ১৮ জন, বন্দরে ১০ জন, ডবলমুরিংয়ে ৮ জন, হালিশহরে ৪০ জন, বাকলিয়ায় ৮ জন, বায়েজিদে ১১ জন, আকবরশাহে ১২ জন, পতেঙ্গায় ৭ জন, সুগন্ধায় ২ জন, মোহরায় ৩ জন, লালখান বাজারে ২জন, মাদারবাড়িতে ৪ জন, কদমতলীতে ১ জন, আগ্রাবাদে ১২ জন, কোতোয়ালীতে ৩৯ জন, চান্দগাঁওয়ে ২৭ জন, পাঁচলাইশে ২৯ জন, পাহাড়তলীতে ১৫ জন, ইপিজেডে ১ জন, সদরঘাটে ৬ জন, এনায়েতবাজারে ২ জন, দামপাড়া ১৯ জন, ইদগাতে ৩ জন, বউবাজারে ১জন, মোগলটুলীতে ১ জন, মুরাদপুরে ১ জন।
রাহাত্তারপুলে মৃত্যু হয়েছে ৩ জন, ফিরোজশাহ কলোনীতে ৪ জন, আশকারদীঘির পাড়ে ২ জন, কর্ণফুলীতে ৫ জন, হাজারী লেইনে ৩ জন, কাজীর দেউরীতে ১জন, নাসিরাবাদ হাউজিংয়ে ৩ জন, কাট্টলীতে ৩ জন, দুই নম্বর গেইট এলাকায় ৩ জন, বিশ্বকলোনীতে ১ জন, দেওয়ানবাজারে ২ জন, বড়পুলে ১ জন, মনসুরাবাদে ২ জন, রেয়াজুদ্দিন বাজারে ২ জন, হিলভিউতে ১ জন, চন্দপুরা এলাকায় ১ জন, দেওয়ানহাটে ২ জন, ব্যাটারি গলিতে ১ জন, কালুরঘাটে ১ জন ও কাতালগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় ১৭ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। সূত্র-গ্রামের কাগজ।